বৈশাখ মাস জুড়ে নিরামিষ আহার করলে সর্বদুঃখের নাশ ঘটে। এ নিয়ে মহাভারতে ভীষ্মদেব বলছেন-



অথবা মাসমেকং বৈ সর্বমাংসান্যভক্ষয়ন। 

অতীত্য সর্বদুঃখানি সুখং জীবেন্নিরাময়ঃ ॥

 বর্জ্জয়ন্তি হি মাংসানি মাসশঃ পক্ষশােহপি বা। 

 তেষাং হিংসানিবৃত্তানাং ব্ৰহ্মলােকো বিধীয়তে ॥

🌿অনুবাদঃ

যে সমস্ত মানুষ কার্তিক, মাঘ ও বৈশাখের এক মাস সমস্ত মাংস পরিত্যাগ করেন, তিনি সকল দুঃখ অতিক্রমপূৰ্ব্বক নিরাময় হয়ে সুখে জীবনযাপন করেন॥ যাহারা মাসে মাসে ও পক্ষে পক্ষে মাংস বর্জন করেন, হিংসা হতে নিবৃত্ত সেই সজ্জনদের জন্য ব্ৰহ্মলােক নির্দিষ্ট থাকে।।

🏵[মহাভারত অনুশাসন পর্ব, অধ্যায় ১০০, শ্লোক-৯৪,৯৫ ]🏵

★★★মানবজাতির পিতা মহর্ষি মনু মনুসংহিতা শাস্ত্রে সবার প্রথমেই মাছ ভক্ষণ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন--*

*_"যো যস্য মাংসমশ্নাতি স তন্মাংসাদ উচ্যতে।"_*

*_মৎস্যাদঃ সর্বমাংসাদস্তস্মান্মৎসান্ বিবর্জয়েৎ॥_*

      *(মনুসংহিতা ৫ /১৫)*

#অর্থাৎ"যে যার মাংস খায়,সেই ব্যক্তি তন্মাংসখাদক(সেই প্রাণীর মাংস খাদক) বলে কথিত। কিন্তু মাছ সমস্ত প্রাণীর মাংস খায়।সব রকমের মরা প্রাণীর পচা দেহ মলমূত্রাদি খেতে অভ্যস্ত। সুতরাং একটি মাছ খাওয়া যা, আর সব রকমের প্রাণীর মাংস খাওয়াও তাই। তাই মাছ খাওয়া সর্বতোভাবে পরিত্যাজ্য।*

★★★#মনুসংহিতা_ শাস্ত্রে পঞ্চম অধ্যায়ে ৫৫ নং শ্লোকে বলা হয়েছে--

*_"মাংস ভক্ষয়িতামুত্র যস্য মাংসামিহাদ্ম্যহম্।_* 

*_এতন্মাংসস্য মাংসত্বং প্রবদন্তি মনীষিণঃ॥"_*

 *মনিষীগণের দ্বারা _'মাংস' কথাটির অর্থ ব্যাখ্যা করা হয়েছে- _'মাম্' স খাদতি ইতি মাংস'_ অর্থাৎ, _"সেও আমাকে খাবে যেরূপ আমি তাকে খাচ্ছি।_"*

    *অর্থাৎ  _"ইহলোকে আমি যার মাংস ভক্ষণ করছি পরলোকে আমাকেও সে ভক্ষন করবে।

মাছ-মাংস হচ্ছে উগ্র রাজসিক ও ঘোর তামসিক খাদ্য, যা মানব মনের পশুবৃত্তি বাড়িয়ে তোলে, ধীরতা ও পবিত্রতা নষ্ট করে। রক্ত-মাংস-হাড়-পিত্ত দিয়ে তৈরি খাদ্য হলো ঘোর তমসান্ধ ব্যাক্তির খাদ্য। তাই মাছ-মাংস অমেধ্য অর্থাৎ, অস্পৃশ্য খাদ্য রূপে চিহ্নিত। শ্রীমদ্ভগবদগীতায় (১৭/১০) ভগবান নির্দেশ দিয়েছেন এই অস্পৃশ্য খাদ্য তামসিক ব্যক্তিদের প্রিয়।

চামেধ্যং ভোজনং তামসপ্রিয়ম।

পিশাচ রাক্ষস ডাইনী ইত্যাদি ধরনের জাতি কিংবা হিংস্র প্রাণীরা রক্ত মাংস ভোগ করতে চায়। কিন্তু সভ্যতাগর্বী কেন পিশাচ- রাক্ষস ধর্ম গ্রহন করবে? 

শ্রীমদ্ভগবতে (৪/১৮/২১) বলা হয়েছে যক্ষ-রক্ষাংসি ভূতানি পিশাচাঃ পিশিতাশনাঃ। 

অর্থাৎ যক্ষ, রাক্ষস, ভূত ও পিশাচেরা মাংস আহারে অভ্যস্ত।

''আহারশুদ্ধৌ সত্ত্বশুদ্ধিঃ, সত্ত্বশুদ্ধৌ ধ্রূবা স্মৃতিঃ।

স্মৃতিলম্ভে সর্বগ্রন্থীনাং ব্রিপমোক্ষঃ''।।

(ছান্দোগ্য উপনিষদ-৭/২৬/২)

''অর্থাৎ যজ্ঞ অনুষ্ঠান করার ফলে খাদ্যসামগ্রী শুদ্ধ হয় এবং তা আহার করার ফলে জীবের সত্তা শুদ্ধ হয়। সত্তা শুদ্ধ হবার ফলে স্মৃতি শুদ্ধ হয় এবং তখন সে মোক্ষ লাভের পথ খুজে পায়''।

(অথ্যাৎ নিরামিষ না সেটাকে প্রসাদ করে খেতে হবে)

"হরে কৃষ্ণ" জয় শ্রীকৃষ্ণ"

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন