মায়াপুর

 #মায়াপুর




প্রথম মায়াপুর যাওয়া অনেক ছোট বেলায়.. তখন কার কথা খুব হালকা মনে পড়ে.. এবার বড়ো বয়সে 2 দিন আগে ঘুরে এলাম পরিবারের সকলের সাথে.. মায়াপুরের ইস্কন মন্দির মোটামুটি শুধু বাঙালী নয় পৃথিবীর অনেকের কাছেই ভীষণ পরিচিত.. মায়াপুর, যেটা অতীতে মিয়াপুর নাম পরিচিত ছিল.. হুগলী আর জলঙ্গি নদীর সংযোগ স্থলে অবস্থিত চৈতন্য মহাপ্রভুর ধাম হিসেবে বিখ্যাত.. আর মায়াপুরের অনেক মন্দির থাকলেও ইস্কনের মন্দির বোধ হয় প্রধান আকর্ষন.. আরো বেশি আকর্ষন বাড়বে যখন 2023 এ পৃথিবীর সব থেকে বড়ো মন্দির vedic planetarium এর উদ্বোধন হবে..আমরা কলকাতা থেকে একদিনের জন্যই গেছিলাম.. সকাল সকাল গাড়ি করে বেরিয়ে পড়লাম.. দূরত্ব 130 km মতো.. 3 ঘন্টা সময় লাগার কথা হলেও রাস্তায় বেশ যানজট থাকার জন্য সাড়ে চার ঘন্টা মতো সময় লাগলো পৌঁছতে.. মায়াপুরে মন্দিরে খাবার জায়গায় অনেক গুলো.. গদা ভবন, গীতা ভবন ছাড়াও প্রধান মন্দিরে দুপুরের খাবার ব্যবস্থা আছে.. আর নাহলে হোটেল তো অনেক গুলোই আছে.. আমরা পৌঁছে গীতা ভবনে খাবার জন্য কুপন কাটলাম.. তারপর জুতো আর ফোন জমা করে মন্দিরে গেলাম শ্রী কৃষ্ণ আর রাধা রানী কে দর্শনের উদ্দেশ্য এ.. মন্দির বেলা এক টা থেকে বিকেলে চার টে অবধি বন্ধ থাকে.. ভগবানের রূপ নিয়ে আমি আর কি বলবো.. অপূর্ব সুন্দর বিগ্রহ এখানকার.. আর মন্দিরের পরিবেশ এতো টাই সুন্দর যে অতি বড়ো নাস্তিকের ও মনে ভক্তি সঞ্চার হবে.. মন্দিরে তখন কীর্তন চলছিল আর ঠাকুর কে ভোগের আরতি চলছিল.. কি অপূর্ব সে দৃশ্য না দেখলে বর্ণনা করা সম্ভব নয়.. মূল মন্দিরে রাধা মাধব কে ঘিরে আছেন ললিতা বিশাখা সহ আটজন সখি.. যেনো একশো পাঁপড়ির পদ্মফুল কে ঘিরে আট টি পাঁপড়ি.. খুব সুন্দর তার রূপ.. এছাড়াও নরসিংহ দেব আর নিতাই গৌরাঙ্গের বিগ্রহ ও আছে..পুজো শেষে একটু প্রসাদ গ্রহণ করে গেলাম গীতা ভবনে দুপুরের খাবার জন্য.. ভাত ডাল চপ সবজি পনীর রুটি পায়েস ছিল মেনু তে .. ভালোই খেলাম.. ওই যে বলে না ঠাকুরের নাম যাই খাও না কেন সেটাই অমৃত.. খাওয়া হলে গাছের ছায়ায় একটু জিরিয়ে ঘুরতে গেলাম এদিক ওদিক.. ইস্কন মিন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীল প্রভুপাদ এর সমাধি মন্দির আর museum এও গেলাম যেখানে ওনার বেশ কয়েকটি মূর্তি করা আছে তার থেকে ওনার জীবনী আর বৃহৎ কর্মকান্ড সম্পর্কে ধারনা পেলাম.. জানলাম International Society for Krishna Consciousness (ISKCON) একটি গৌড়ীয় বৈষ্ণব সংস্থা শ্রীল প্রভুপাদ প্রতিষ্ঠা করেন New York এ 1966 সালে.. তার পর আসতে আসতে এর ব্যাপ্তি ঘটেছে.. দেশে বিদেশে প্রচুর ভক্ত.. যাই হোক আরো ঘোরার ইচ্ছে থাকলেও প্রচন্ড গরমে নাজেহাল হয়ে ফিরতি পথ ধরতে হলো.. এর পরের বার হাতে আরো সময় নিয়ে নবদ্বীপ ও ঘোরার ইচ্ছে আছে.. মনে অনেক টা শান্তি নিয়ে বাড়িতে ফিরলাম😊😊😊..

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন