শ্রীল হরিদাস ঠাকুর




বুঢ়ণ গ্রামেতে অবতীর্ণ হরিদাস।

সে ভাগ্যে সেসব দেশে কীর্তন প্রকাশ ।। চৈ. ভা. (আদিখণ্ড ১৬/১৮)

কতিপয় ব্রাহ্মণ্যবাদী শ্রীল হরিদাস ঠাকুরকে ব্রাহ্মণ সন্তান বলে চালিয়ে দেবার হীন প্রচেষ্টা করে। কিন্তু এর কোনো উপযুক্ত প্রমাণ নেই। কোনো কোনো গ্রন্থমতে (শ্রীঅদ্বৈত বিলাস), শ্রীল হরিদাস ঠাকুর বুঢ়ণ গ্রামে খানাউল্লাহ্ কাজির গৃহে অবতীর্ণ হন। বাল্যে তাঁর নাম ছিল হাবিবুল্লাহ বা হারেস।

হরিদাস ঠাকুর বূঢ়ণ থেকে বেনাপোলে এসে কয়েক বৎসর অবস্থান করেন। বেনাপোলে লক্ষহীরাকে কৃপা করে সেখান থেকে দুই তিন মাইল দূরে নাওভাঙ্গা নদীর তীরে কিছুদিন অবস্থান করেন। সেস্থানের নাম এখন হরিদাসপুর। এ শ্রীপাটে ইস্কনের একটি মন্দির রয়েছে। এস্থানে কিছুদিন অবস্থান করে তিনি সপ্তগ্রাম ত্রিবেণীর নিকটবর্তী চাঁদপুর গ্রামে হিরণ্য ও গোবর্দ্ধন মজুমদারের (শ্রীল রঘুনাথ দাস গোস্বামীর পিতা) কুলপুরোহিত বলরাম আচার্যের গৃহে অবস্থান করেন।

শ্রীমন্মহাপ্রভু শ্রীল হরিদাস ঠাকুরের দ্বারা নাম মাহাত্ম্য প্রচার করেন এবং তাঁকে নামাচার্য পদে ভূষিত করেন। কাজির বিচারে তাঁকে বাইশ বাজারে বেত্রাঘাত করার হুকুম এলেও তিনি বলেন,

খণ্ড খণ্ড হই দেহ, যায় যদি প্রাণ।

তবুও বদনে না ছাড়িব কৃষ্ণ নাম \

মহাপ্রভুর আদেশে তিনি ও নিত্যানন্দ প্রভু সর্বত্র ভ্রমণ করে নামপ্রেম প্রচার করেন। শেষজীবনে তিনি শ্রীমন্মহাপ্রভুর নিকটে পুরীধামের সিদ্ধবকুলে থেকে প্রত্যহ নামভজন আদর্শ দেখিয়েছেন। মহাপ্রভুর অন্তর্ধানের বিরহ তিনি সহ্য করতে পারবেন না বলে, তিনি মহাপ্রভুর নিকট বর প্রার্থনা করেন, তিনি যেন গৌরমুখ দর্শন করে, মুখে ‘শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য’ নাম উচ্চারণ করতে করতে দেহ রাখতে পারেন। মহাপ্রভু তা স্বীকার করে নেন। শ্রীল হরিদাস ঠাকুরের প্রাণহীন দেহ নিয়ে নৃত্য কীর্তন করে মহাপ্রভু সমুদ্রতীরবর্তী স্থানে বালুকামধ্যে ঠাকুরের সমাধি প্রদান করেন এবং বলেন যে, আজ হতে সমুদ্র মহাতীর্থ হলো।

পথনির্দেশ

বুঢ়ণ গ্রাম সাতক্ষীরা জেলায় অবস্থিত। শ্রীপাট বেনাপোল থেকে ৯ কি.মি. দক্ষিণে বুঢ়ণ গ্রাম। বর্তমানে শ্রীপাটের কোনো সন্ধান নেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন