শ্রীপাদ রামানুচার্যের পরে অন্যতম আচার্য ছিলেন- "পরাশর"...পরাশর যখন মাত্র ৫ বছরের ছিলো,ওই সময় ভারতবর্ষে এক দিকবিজয় পন্ডিত ছিলেন..

🌹শ্রীপাদ রামানুচার্যের পরে অন্যতম আচার্য ছিলেন- "পরাশর"...পরাশর যখন মাত্র ৫ বছরের ছিলো,ওই সময় ভারতবর্ষে এক দিকবিজয় পন্ডিত ছিলেন..


🌹ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় সেই দিকবিজয় পন্ডিত পরিভ্রমণ করতেন,খুব বিখ্যাত,সবাই সম্মান করতেন..যেই পালকিতে করে যেতেন সেই পালকি সুন্দর করে মনি-মানিক্যে সাজানো ছিলো..
খুব অহংকারী ছিলেন উনি..
উনি এসেছিলেন শ্রীরঙ্গমে..,উনি পালকিতে করে যাচ্ছেন,উনার আশেপাশে উনার অগনিত অনুগামী..,বয়ে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে,উনার জয়ধ্বনি দিচ্ছে...

🌹সেইসময় পরাশর,যার মাত্র বয়স ৫ বছর,সে পালকির সামনে এসে দাঁড়ায়..এবং বলে মহাশয় আমার একটা প্রশ্ন রয়েছে...

🌹দিকবিজয় পন্ডিত নিজেকে অপমানিত বোধ করছে যে,পুচকি বাচ্চা,মাত্র ৫ বছর বয়স,সে আমাকে প্রশ্ন করবে..!!!!

🌹এবং দিকবিজয় পন্ডিত ছোট বাচ্চাটিকে বলছে,ছোট বাচ্চা,তুমি জানো না আমি কে,তুমি আমায় প্রশ্ন করবে,.,এবং বাচ্চাটাকে খাটো করার জন্য বলছে,আমি দেখতে পাচ্ছি তোমার ঠোঁটে এখনো তোমার মায়ের স্তনদুগ্ধ লেগে আছে.,আর তুমি আমাকে প্রশ্ন করতে এসেছো..আমি দিকবিজয় পন্ডিত..!

🌹তখন পরাশয় তাকে বলছে,হে মহাশয়,আপনি যদি প্রকৃত জ্ঞানী হন,তাহলে আপনি আমার শরীরের আয়তন দেখে কেনো বিচার করছেন.আমিতো আমার শরীর না.আমার একটি প্রশ্ন রয়েছে,আপনি দিকবিজয় পন্ডিত দয়া করে আমার প্রশ্নের উত্তর দিন.

🌹ছোট্ট পরাশর এত সুন্দর করে উনার ভাবটা প্রস্তাবনা করেছে দিকবিজয় পন্ডিতের কাছে,.তখন দিকবিজয় পন্ডিত বলছে,"বলো তোমার কি প্রশ্ন"?

🌹ওই ছোট্ট বালকের হাতে,একমুঠো বালি ছিলো..ছোট্ট বালক এক মুঠো বালি নিয়ে দিকবিজয় পন্ডিতকে জিজ্ঞেস করছে,হে মহাশয় আপনি কি বলতে পারেন,"আমার হাতে কয়দানা বালি আছে?"কারন এই দিকবিজয় পন্ডিতের দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো যে,পৃথিবীর এমন কোন প্রশ্ন নেই,যেই প্রশ্নের সে উত্তর দিতে পারবে না..

🌹তো স্বাভাবিক  ভাবেই ওই দিকবিজয় পন্ডিত উত্তর দিতে পারেন নি..তখন পরাশর বলছে,যে আপনি নিজেকে দিকবিজয় পন্ডিত বলছেন,কিন্তু যিনি প্রকৃত জ্ঞানী,তিনি সবার মধ্যে পরমাত্মাকে দর্শন করেন..,তিনি সবাইকে সম্মান করেন...তিনি সবার মধ্যে ভগবান যে প্রতিভা টি দিয়েছেন,সেইটা দেখেন...

🌹পরাশর বলছেন,যে একজন প্রকৃত জ্ঞানী সবার মধ্যে,ভগবানকে দর্শন করেন,কাউকে খাটো করেন না..ঠিক যেরকম- একটি গাছ তাতে যদি ফল ভর্তি থাকে,স্বাভাবিক ভাবে সেই গাছটি নমনীয় হয়.,ডাল-পালা গুলো কিন্তু নমনীয় হয়..

🌹গাছে যদি ফলে পরিপূর্ণ থাকে,সেই গাছটি নমনীয় হয়..ঠিক সেরকম একজন ভক্ত যখন সৎগুনাবলীতে পরিপূর্ণ থাকে,সে নমনীয় হয়,সে বিনয়ী হয়,সে অহংকারী হয়না..

🌹আর যার মধ্যে এই সমস্ত গুনাবলী নেই,অপরের প্রতি হিংসা করে..সে ভাবে কারো মধ্যে ভালো গুন নেই..সে নিজেই সবচাইতে ভালো..অপরকে উপেক্ষা করে.,সে হচ্ছে ওই এক মুঠো বালির মত..কোন মূল্য নাই..

🌹ভগবতভক্তিতে আমরা যে ষড়ঙ্গ শরনাগতি পাই,এর মধ্যে ১ম হচ্ছে - দৈন্য...

🌹" Humility is real strength ", বিনয় হচ্ছে আসল শক্তি..

🌹স্ত্রী যখন বিনয়ী থাকে বাড়িতে স্বামীর কাছে,তখন সে কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই তার সেই বিনম্রতার দ্বারা,সেবার দ্বারা স্বামীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে...

🌹"ভালবাসা,বিনম্রতা,অপরকে সম্মান দেয়া,এইসব তো প্রকৃত শক্তি...

🌹 কৃষ্ণকে আর্কষন করতে চান,তাহলে আমাদের বিনয়ী হতে হবে...

🌹"তৃণাদপি সুনীচেন তরোরপি সহিষ্ণুণা,অমানিনা মানদেন কীর্তনীয়ঃ সদা হরিঃ....."


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন