শ্রী জগন্নাথ লীলামৃত

 আজকের লীলাঃ (১) 'কেউ আমাকে খেতে দিচ্ছে না'



(২)গুরুতর শাস্তি"ও "জগন্নাথের বন্ধু মহন্তি"
(১)#রাজাপুর জগন্নাথ দেবের অদ্ভুত লীলা কাহিনী ""কেউ আমাকে খেতে দিচ্ছে না""
#মায়াপুর ইসকন চন্দ্রোদয় মন্দির থেকে ১ কি.মি দূরে রাজাপুর। সেখানে প্রতিষ্ঠিত রয়েছেন শ্রীজগন্নাথ, বলরামদেব ও সুভদ্রা মহারানী।।
শ্রী জগন্নাথ অত্যন্ত জাগ্রত বিগ্রহ হিসেবে এ অঞ্চলে পরিচিত।
(একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে)
#১৯৭১ এ বাংলাদেশ যুদ্ধের সময়, ভারতে অনেক সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
#মন্দিরে পূর্ববর্তী মালিক ফটিক চক্রবর্তীর সাত কন্যা ছিল। তিনি এখানে বসবাস করতে ভীত হয়ে পড়েন, কেননা অনতিদুরে একটি মুসলিম গ্রাম রয়েছে। সুতরাং তার কন্যাদের রক্ষা করেতে তিনি তাদের কে নিয়ে কটোয়ায় চলে যান। কিন্তু স্থানীয় মুসলমানদের একজন কটোয়ায় গিয়ে তাকে বলেন “ দয়া করে রাজাপুরে ফিরে চলুন।” ফটিক চক্রবর্তী সবিনয়ে অস্বীকার করলেন। তখন সেই লোকটি বললেন, “ আমরা আপনাকে সর্বতোভাবে রক্ষা করব, চিন্তিত হবেন না।” ফটিকবাবু পুনরায় অস্বীকার করলেন। তখন সেই লোকটি বললেন, “ প্রকৃত কথা হচ্ছে আমরা মন্দির থেকে কন্ঠস্বর ভেসে আসতে শুনছি। তারা বলছে,‘কেউ এখানে আর আসছে না কেন? কেন কেউ আমাদের খেতে দিচ্ছে না।” আমরা খুব ভীত হয়ে পড়েছি। দয়া করে ফিরে চলুৃন, আমরা আপনাকে ২৪ ঘন্টা পাহারা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।” সুতরাং তখন তিনি রাজাপুরে ফিরে আসতে সম্মত হলেন। এবং গ্রাম বাসীরা তার পরিবারকে পূর্ণ সুরক্ষা প্রদান করলেন।
(২) #আজকের লীলাঃ "গুরুতর শাস্তি"ও "জগন্নাথের বন্ধু মহন্তি"
রাজাপুর জগন্নাথ দেবের অদ্ভুত লীলা কাহিনী (একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে)।
#এক সময় শ্রীধাম মায়াপুরের নিকটতম রাজাপুর অঞ্চলে একটি চোর, প্রায়ই জগন্নাথ মন্দিরে আসত এবং যা কিছু পেত চুরি করতো। এভাবে চোরটি চুরি করতে থাকলো, তার বন্ধুরা তাকে বারবার সতর্ক করেছিল যে, এই শ্রীজগন্নাথ বিগ্রহ অত্যন্ত জাগ্রত ও শক্তি-শালী, এবং তিনি কোন অসদাচরন সহ্য করবেন না। তবুও চোরটি তাদের কথায় কর্ণপাত না করে সে দুষ্কর্ম করে যেতে লাগল।
#হঠাৎচোরটি একটি বাড়িতে ঢুকে চুরি করার সময় সে ধরা পড়ে গেল এবং স্থানীয় মানুষ তার একটি হাত কেটে দিল। যখন তাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ এল, শোচনীয় অবস্থায় পতিত সেই চোর পুলিশের কাছে কাতর আবেদন রাখল,“ আমি জানি কেন আমার এমন হল। আমাকে জেলে নিয়ে যাবার আগে জগন্নাথের মন্দিরে নিয়ে চলুন , যাতে আমি তার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাইতে পারি অতঃপর চোরটিকে মন্দিরে আনা হয়।
""জগন্নাথের বন্ধু মহন্তি"
#পুরী মন্দিরের দক্ষিণ দরজার কাছে ভগ্নপ্রায় বন্ধু মহান্তির বাড়ি। অনেক বছর আগে বন্ধু মহান্তি ওই বাড়িটিতে থাকতেন। বন্ধু মহান্তি পুরীতে বসবাস শুরু করার আগে কটকের কাছাকাছি একটি গ্রামে থাকতেন। মহান্তি শ্রীজগন্নাথদেবের খুব ভালো ভক্ত ছিলেন এবং প্রতিদিন জগন্নাথদেবকে ভোগ নিবেদন করতেন। ভোগ নিবেদন পর্যন্ত নিজে অভুক্ত থাকতেন। একবার ওনার গ্রামে প্রচন্ড দূর্ভিক্ষ হয় তাই মহান্তি পুরীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। পুরী পৌঁছতে অনেক রাত হয়ে যায়। ক্ষুধা তৃষ্ণায় ক্লান্ত মহান্তি মন্দিরের উল্টোদিকে আশ্রয় নেন। কিছুক্ষন পর এক ব্যাক্তি তাকে হঠাৎ একটি বড় থালায় করে খাবার দিয়ে যান। ক্লান্ত মহান্তি লোকটির পরিচয় না জেনেই খাদ্য খেতে শুরু করেন এবং কিছুক্ষণ পর দেখেন লোকটি কখন চলে গেছেন। মহান্তি খাওয়ার থালাটি নিজের কাছে রেখে ঘুমিয়ে পরেন। পরদিন সকালে মন্দিরে হইচই কারণ জগন্নাথ দেবের একটি সোনার ভোগ থালার খোঁজ নেই। পুরীর রাজার সিপাহিদের তল্লাশিতে বন্ধু মহান্তির কাছ থেকে সেটি পাওয়া যায়। যদিও কেউই বুঝতে পারেনা যে মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকা সত্বেও কিভাবে থালাটি চুরি সম্ভব।
#কিন্তু তবুও দেবতার সোনার থালার চুরির অপরাধে রাজার বিচারে মহান্তির কারাদন্ড হলো। যেদিন মহান্তির বিচার হয় সেইদিন রাতেই পুরীর রাজা জগন্নাথদেবের কাছ থেকে স্বপ্নাদেশ পান। জগন্নাথ দেব স্বপ্নে রাজাকে বলেন মহান্তি নির্দোষ জগন্নাথদেব নিজেই থালায় করে ভোগ নিয়ে অভুক্ত মহান্তিকে খেতে দিয়েছেন। বন্ধু মহান্তি কারাগার থেকে ছাড়া পান। রাজা তাঁকে মন্দিরের দক্ষিণ দরজার কাছেই একটি আশ্রয়স্থল নির্মাণ করে দেন। আমৃত্যু মহান্তি ওখানেই বাস করতেন। এবং আজও পুরীতে কেউ অভুক্ত থাকে না। মন্দির কমিটির প্রসাদ যে কোনো অভুক্ত লোককে বিনা দামে দেওয়া হয়। তাই তো জগন্নাথদেব ভক্তের ভক্ত।
#আপনারা সকলে জগন্নাথের এই সুন্দর লীলা শ্রবণ করুন এবং অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে অপ্রাকৃত কৃপা লাভ করুন।। 🙏🙏হরে কৃষ্ণ🙏🙏

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন